এলোমেলো আমি-১০


এলোমেলো আমি-১০ 

আমার এই রবিবারগুলো মনে পড়ে অনেক কিছুই. যখন চাকরি করতাম না, বেরিয়ে পড়তাম. যেকোনো একটা ট্রেন এ চেপে চলে যেতাম অনেক দূর. বিভিন্ন কবি-সম্পাদকের সঙ্গে আড্ডা চলত. তারা লেখা চাইতেন. অনেক লিখতাম. মনে আছে নিলাদ্রী ভৌমিক এর কথা. অভিষেক পত্রিকার কথা. ৯০ এর প্রথম এবং শেষের দিকেও অনেক লিখেছি ওই পত্রিকায়. সে সময়ে নিয়মিত আড্ডা দিতাম জয়দেব দার সঙ্গে. নন্দন এ, কফি হাউস তো ছিলই. আর কোনো কোনো রবিবারের সকালে চলে যেতাম অনির্বান ধরিত্রিপুত্রের বাড়ি. সেখানেই আমার আলাপ হয় গৌতম বসুর সঙ্গে. অনির্বান্দা এবং গৌতম বসু দুজনেই অত্যন্ত বড় মাপের কবি. গৌতম বসুর অন্নপূর্ণা ও শুভকাল পড়ে আমি তখন মোহিত. অনেক কম লেখেন গৌতম দা. কিন্তু যা লেখেন তা খাঁটি. জয়দেব দা আমাকে একদিন বলেছিল তদের নব্বই এর সমস্যা হলো তদের মধ্যে ইউনিটি নেই. কেউ কারোর জন্য কিছু করিস না. জয়দেব দার ভ্রমন কাহিনী, মেঘদূত, অসম্ভব বড় মাপের কবিতা. জয়দেব দা আমাকে প্রথম ফরহাদ মজহার পড়ান. আল মাহমুদ পড়ান. জয়দেব দা সিপিএম এর সক্রিয় সদস্য হলেও কখনই ধর্মান্ধ ছিল না. এটা ছিল জয়দেব দার অন্যতম গুন. ২০০০ সালে প্রথম কবিতা উত্সব যখন হয়, ৯০ থেকে যে সাত জন কবিকে নিয়ে আলাদা কবিতা পাঠ-এর ব্যবস্থা হয়েছিল তাতে আমি ছিলাম. সেই সময়ে আরও একটি ঘটনা ঘটে. সেটা ছিল সাহিত্য একাডেমিতে ৯০ এর পনেরোজন এর কবিতা পাঠ এবং আলোচনা. সঞ্চালক ছিলেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী  এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়. সেই পনেরজনের কবিতা নিয়ে এবং আলোচনা নিয়ে একটি বই-ও  বেরোয়. কবিতা চর্যা. সে কি আর এখন পাওয়া যায়? জানি না. এই সবই হয় তুমি, অরক্ষিত কাব্যগ্রন্থ বেরোনোর আগে. 
মনে আছে তখন ব্রাত্যদা নবীন বনাম প্রবীন বলে একটা অনুষ্ঠান করত খুব সম্ভবত ইটিভিতে. আমার এবং সৌরভ এর বিপরীতে ছিলেন সুবোধ দা এবং কৃষ্ণা বসু. মনে আছে আমরা কিছু কথা বলেছিলাম যেগুলো তাঁদের পছন্দ হয়নি. হাহাহাহা! এখন মনে পড়লে হাসি পায়. এ সব তর্ক বিতর্কের কি মানে! আরও একজন কে মনে পড়ে তিনি হলেন সত্য ভাদুড়ী. স্যাস বলে অসাধারণ একটা নাত্যপত্র বেরোত সে সময়ে. আমি ছিলাম সেই পত্রিকার সহ সম্পাদক. আমাদের অফিস তা ছিল তখন বৌবাজারে. প্রতি বৃহস্পতিবার আমরা সন্ধেবেলা বসতাম সেখানে. নাট্যকার, পরিচালক, লেখক সবাই আসতেন. খুব ভালো আড্ডা হত. লেখা নির্বাচন হত. কতবার ব্রাত্যদা আর আমি একসঙ্গে গেছি. সত্যদার পিছনে লেগেছি. সেই সব পিছনে লাগাগুলো ছিল খুব মধুর. খুনসুটি-ই বলা চলে. তো সে সময়ে আমি জন অসবর্ণ এর একটি নাটক লুক ব্যাক ইন আঙ্গার এর বঙ্গীয় করণ করি. নাম হয় অগ্নীবর্ষী. সেই নাটক তা বেশ জনপ্রিয় হয়. এমন কী বর্তমানে সংসৃতি নাট্যদলের প্রধান দেবেশ চট্টোপাধ্যায় আমার এই নাটক তা অভিনয় করার কথাও বলেন. শুরু হয় নাটকটা নিয়ে অভিনয়. আমার খুব উত্তেজনা লাগত যে আমার নাটক নিয়ে এত লোক ব্যস্ত! তার পর যেদিন প্রথম অভিনয় হয়, আমার খুব ভালো লাগে. আমার নিজের লেখা সংলাপগুলো কেউ মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিনয় করছে, এটা দেখতে পাচ্ছি, এটা ভাবলেই রোমাঞ্চিত লাগে এখনো. 
সুনেছিলাম বেশ কয়েকটা শো হয়েছিল নাটকটার. 
তার পর দেবেশ দা আমাকে অনেক বার নাটক লিখতে বলেছে. আমার একটি কাব্যনাটক বেরিয়েও ছিল স্যাস পত্রিকায়.প্রচুর অনুবাদ করেছি আমি ওই পত্রিকার জন্য. সম্পাদনা করেছি. আমার খুব ভালো লাগত. তার পর চাকরিতে ঢুকে আর আমি যেতে পারতাম না. অনেক প্রবন্ধ-ও লিখেছি স্যাস পত্রিকাতে. সেই সব পত্রিকাগুলো, লেখাগুলো যে কোথায় গেল! এমনকী আমার লেখা নাটকটার কপিও নেই. খারাপ লাগে. আমি যদি আরেকটু গোছানো হতাম! 
সেই সত্য ভাদুড়ী, বামপন্থী সত্য ভাদুড়ী, এখন বর্তমান সরকারের অধীনে কোন এক বড় পোস্ট এ আছে. যেহেতু আমি এই সরকারের বিরুদ্ধে, তাই তিনি আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেন না. কী অদ্ভুত লাগে! আমি যেহেতু স্যাস পত্রিকাতেই আমার নাত্যবিষয়ক অনেক লেখা লিখতাম, আমার লেখা আর উনি চান না, এমনকী আমার লেখা ছাপতে উনি অস্বীকারই করেছেন!
আমার কতগুলো বিষয় বেশ অদ্ভুত লাগে! যাঁরা আমার লেখা কে ভালো বলতেন, চেয়ে চেয়ে লেখা ছাপতেন, তাঁদের কী সত্যি আমার লেখা ভালো লাগত? আমি যোগাযোগ রাখতাম বলে কি তাঁরা যোগাযোগ রাখতেন? না কি আমার রাজনৈতিক ভূমিকাটাই বড় হয়ে গেল, যেখানে সব কাগজগুলি আমাকে ত্যাগ করেছে? অথবা এমন হতে পারে, আমার লেখার আদৌ কোনো ছাপ নেই. কোনো ভাবনা নেই. মানুষ খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যায়. ব্রাত্যদার একটি নাটকের  সংলাপ জাকাত সত্য তা আমি আমার জীবন দিই টের পাই-- পক্ষ নাও, না হলে তোমার অবস্থা হবে রিপ ভান উইন্কিল এর মত.
  বা হয়ত আমার নিজেকে সেত সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই. বা হয়ত আমার ব্যাক্তিগত জীবনের ছায়া অনেক বড় আমার কাজের চেয়ে!
মনে আছে আমি আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রচুর বই এর সমালোচনা করেছিলাম. সেগুলি একটাও খারাপ ছিল না. রামকুমার বাবুর বই, রবিশংকর বল এর বই, রমেন্দ্র কুমার আচার্য চৌধুরীর বই. তুষার চৌধুরীর বই. আরো অনেক. কোনো লেখাকেই কেউ খারাপ বলেন নি কখনো. বরং আমি অনেক পজিটিভ ফিডব্যাক পেয়েছি. কিন্তু গার্গীর সঙ্গে যেদিন উকিল এর কাছে গেলাম, ইন্দ্রজিত দা বললেন তোমার লেখা অনেক বেশি করে ছাপা হত আনন্দবাজার এ এই সম্পর্কের জন্য! আমি ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করলাম তাহলে কি লেখাগুলো ভালো ছিল না? আপনি পক্ষপাতিত্ব  করতেন? কিন্তু গার্গীর সঙ্গে সম্পর্কের অনেক আগে থেকেই তো আমি লিখি আনন্দবাজার এ. 
হলো কী, উনি আমাকে গার্গীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছেদ হবার পর থেকে আর বই পাঠানি না. 
তাহলে কি সব ব্যাক্তিগত সম্পর্কের উপর নির্ভর করে? লেখা, পাঠকের ফিডব্যাক, এগুলোর কি কোনো দাম নেই পত্র পত্রিকাগুলোর  কাছে? 
আমি জানি এই লেখা লিখে আমি আরও শত্রু তৈরী করছি. কিন্তু এটাও তো ঠিক,যে আমি লেখা ছাড়া আর জীবনে কিছু করতেও চাইনি. অনেকে আমাকে ধান্দাবাজ বলে. আমার জগতগৌরী কাব্য নিয়ে অলোকরঞ্জন যখন লিখলেন তখন অনেকে আমাকে বলল আমি সম্পর্ক কে অবলম্বন করেছি. আনন্দবাজার পত্রিকায় হাফ পেজ সমালোচনা বেরিয়েছিল. 
কিন্তু আমি তো কিছুই জানতাম না. 
আমি তো কাউকেই কিছু করতে বলিনি আমার জন্য.
আর যদি নিজেকে প্রজেক্ট কতে চাইতাম, তাহলে কি অনেকের থেকে বেশি পারতাম না?
কিন্তু আমি তো তাও কিছু করি নি.
আমি সাহিত্য আকাদেমি তে গিয়ে বসে থাকিনি.
বড় মাপের সাহিত্যিকের আড্ডাতে যাইনি. সম্পাদকদের সঙ্গে পি আর ও করে যাইনি. বরং আমার এই সম্পর্ক নিয়ে যখন লোকজন কে নানা কিছু বলা হয়েছে তা জানতে পেরেছি অনেক পর.
আমি আমার নিজের লেখাটা লিখে গেছি বলতে গেলে. গার্গীর সঙ্গে ইন্দ্রজিতদাদের সম্পর্কের কোনো নাম নেই. গার্গী তাঁদের বাড়িতে থাকে. খুব ভালবাসেন তাঁরা গার্গীকে. গার্গী তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ. 
আমিও তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ.
কিন্তু আমিও তো গার্গী কে ভালবাসতাম. আমার একটু বিচ্যুতি হয়েছিল. আমি তার জন্য আর কতবার ক্ষমা চাইব!
কিন্তু লেখা ছাপানোর জন্য ভিক্ষা করতে পারব না. 
রবিশংকর বল এর বই দোজখনামা নিয়ে যখন বড় একটা লেখা লিখলাম তখন রবিদার খুব ভালো লাগলো. কিন্তু তার পর উনি আমার কাছ থেকে লেখা চেয়েও ছাপলেন না. 
স্বাভাবিক.
আমি এতে দোষের কিছু দেখি না. 
কিন্তু একই মানুষগুলির ভিন্ন রূপ দেখতে দেখতে আমি এখন কাউকেই একদম চিনতে পারি না. 
আমার মনে হয় আমি এমন একটা সময়ে বসবাস করছি যেখানে লেখা নয়, লেখক কীরকম, কী ভাবেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ. 
এতে আমার যেটা হয়েছে গত কয়েক মাসে, যে আমি আর কোনো মানুষ কে সম্মান করতে পারছি না. 
আমার যে চাকরি সেখানে আমাকে ফেস মেন্টেন করতে চলতে হয়.
সুগতদার সামনে সেটা করতে হয় না. এই একজন মানুষ যিনি আমার দু:সময়েও পাশে ছিলেন. আছেন. 
কিন্তু আমি আমার জীবনের এই সোনার সময়গুলো এভাবে পেরিয়ে গেলে আর কবে লিখব?
আর কবে হিমালয়ে যাব?
আর কবে ঘুরে বেড়াব?
আমার কবিতা নাকি সকলের ভালো লাগে! কিন্তু কি কেউ তো আর আমাকে জানায় না কিছু!
এখানকার মানুষ জন এত নির্মোহ যে মনে হয় সকলে জেন প্রাপ্ত!
আমি যদি সত্যি চাইতাম অন্য উপায়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে তবে তা সহজেই পারতাম. কিন্তু আমি তা আমার লেখার জন্য অবলম্বন করলে যা হবে তা হলো আমার লেখাকে অবমাননা করা হবে. প্রমাণিত হবে আমি আত্মবিশ্বস্ত নই. এই আত্মবিশ্ব্বস্ত থাকাটাই যে শিল্পীর জীবন ধর্ম!
আমি তো একই রকম ভাবে লিখে যাব না  কখনো. যা লোকেদের ভালো লেগেছে আমি যদি সেই ফাঁদে একবার পড়ে যাই, তাহলে কি আমার পক্ষে সম্ভব হবে নতুন কিছু লেখার? আমাকে কি ভুলতে হবে না নিজেকে? নিজের অতীতকে?
নিজের দু:ক্ষগুলো প্রকৃত সম্পদ. সুখ ক্ষনিকের আমি তা জানি.
কিন্তু দু:ক্ষগুলো পাহাড়ের মত হয়ে গেলে তখন সেই ভারে তো নিজেকে সিসিফাসের মত মনে হয়. 
এই যে এত সবকিছু লিখলাম, তার অন্যতম কারণ আমার বন্ধুরা আর তো কেউ নেই, যাদেরকে বলতে পারব. কেউ নেই যাদের সঙ্গে আমার কথোপকথন চলবে. সুগতদা আমার দাদার মতই হলেও সুগত দা অনেক ব্যস্ত থাকেন. আর তাঁকে আমার সব কথা বলাটাও সম্ভব না. আমি গার্গীর সঙ্গে একজন সাইকোলজিস্ট এর কাছে গিয়েছিলাম. তার প্রশ্ন ও কথাগুলো এত সাধারণ ছিল যে আমার নিজেরই হাসি পেয়ে যাচ্ছিল. এমন কোনো সাইকোলজিস্ট আছেন কি জনকে আমার এই বিরাট ভার সম্পর্কে বলতে পারি?
হয়ত নেই.
হয়ত আমাকে আমার নিজেরই সাইকোলজিস্ট হতে হবে.
আর তার জন্য আমার চিকিত্সক এই লেখাই.
আচ্ছা আমি ভালো বিষয়গুলো মনে করার পাশাপাশি বারবার কেন দু:ক্ষজনক স্মৃতিগুলো হানা দেয়?
আমিও তো চাই সকাল বেলাতে উঠে লিখে ফেলতে একটি নতুন কবিতা. কিন্তু সেই সূত্রটি খুঁজে পাচ্ছি না যাতে আগের মত একটি লেখার সঙ্গে আরও একটি লেখা আপনা থেকে চলে আসবে. আমাকে ভাবতে হচ্ছে কালকের অফিসের কথা. আমাকে ভাবতে হচ্ছে নানা মানুষের নানা চাহিদার কথা. আমাকে ভাবতে হচ্ছে আমার অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যতের কথা!
শূন্য দশকের কেউ আমার কবিতা পড়ে বলে মনে হয় না.
পরের দশকের কেউই যদি না পড়ে, তাহলে আমি কীকরে আর আশা করব আমার লেখা এর পরের দশকের কবিরা পড়বেন? কী করে আশা করব অন্তত জীবদ্দশায় না হোক, মৃত্যুর পরেও কবিতা লিখে পাঠিয়ে দেবার মত কেউ কেউ থাকবেন?
জীবন কে কি আমি খুব সিরিয়াসলি নিচ্ছি?
যাক. পরে আবার ফিরে এসব.
মনটা খুব ভারী লাগছে.
বিনয়্দার একটা কবিতার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে খুব--- নিস্পেষণে ক্রমে ক্রমে অঙ্গারের মতন সংযমে/ হীরকের জন্ম হয়, দ্যুতিময়, আত্মসমাহিত. 
আমি এমন একটা অসুধ চাই, যেখানে আমি আমার স্মৃতিগুলো থেকে বেরিয়ে পড়তে পারি.
আমি এমন একটা অসুধ চাই, যেখানে আমি ঘুমিয়ে থাকতে পারি অনেক দিন.
অথবা হয়ত এ সব কিছুই চাই না.
সবাই কি আমাকে ভুলে গেল?
তা যাক. আমার লেখাগুলোকেও ভুলে গেল?
সত্যি কথা, অনেক প্রশ্নের উত্তর যদি পাওয়া যেত...

যদি আমি বাংলাদেশে চলে যেতে পারতাম! আমার আগের বইগুলো রিপ্রিন্ট করতে পারতাম! যদি একটা কবিতা সংগ্রহ বের করতে পারতাম! যদি আমার প্রবন্ধগুলো সবাইকে পরাতে পারতাম!
এই হালকা ফুলকা লেখার জগতে আমি বেমানান. এক্কেবারে বেমানান.
সবই কি তাহলে ইমেজ তৈরী করার বিষয়? লেখার সাধনা না? আশা করি শূন্য দশকের কবিরা এমনটা ভাবেন না. কিন্তু তাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয় কি?
কেউ বোধয় আমাকে পছন্দ করেন না.
সে ক্ষেত্রেই বা আমি কি করতে পারি?
আমি কোনো কমিটির মেম্বার নই. আমার কোনো ক্ষমতা নেই. আর আমার মাথা নত করে কিছু লোকের কথা মেনে চলতে ভয়ংকর আপত্তি.
কে জানে কী হবে!
অন্তত আমি যদি কিছু লিখে যেতে পারি তাহলেই হবে!
আমার কোনো বই আর আমার কাছে নেই. আমার সত্তা সেটা. আমার আত্মা সেটা. আমার দুর্ভাগ্য আমাকে যারা ভালোবেসেছিলেন, ভালবাসেন, তারা বোঝেন না আমার ভালবাসা, আমার আত্মা হারিয়ে গেলে আমি মৃত্যুর অনেক আগেই মরে যাব. 
হয়ত এখনি গেছি. 
এই সব লেখা সেই আত্মার কান্না হয়ত.
বা হয়ত সবই উল্টোপাল্টা!
মেডুসার চোখ বইটা কি কিনছেন মানুষ? ভালো লাগছে বলছেন অনেকে. কিন্তু সত্যি কি তাঁদের ভালো লাগছে?
আমার যেমন রিপন আর্য, শ্রীদর্শিনি, রাকা, সুমন, অরিত্র, দেবব্রত দের কবিতা ভালো লাগে. এরা খুব ভালো কবি. সংঘমিত্রা, অনিমিখ খুব ভালো কবি. শূন্য দশকের কবিতা খুবই ভালো.
একটা সময় ছিল. চলে গেছে.
সেই সময়ের উপর এখন পিরামিড 
কিন্তু কারুবাসনা যে আমাকেও নষ্ট করে দিয়েছে ব্রাদার. 
তাপসদা, অচ্যুত্দার আত্মহত্যা, জয়দেব দার মৃত্যু আমাকে ভাবায়.
কত স্মৃতি, কত ঘটনা. জীবনটাই খুব এলোমেলো. অমসৃন. নীয়তিদুষ্ট.
সকাল বেলা উঠে হাসিমুখে দিনটা শুরু করতে পারিনি সুগতদা. 
(ক্রমশ) 


 

Comments

  1. চমৎকার লাগছে। আরো লিখা প্রত্যাশা করছি।

    ReplyDelete

Post a Comment