এলোমেলো আমি-২৮


এলোমেলো আমি-২৮

অনেকদিন ডেঙ্গু-তে শুয়ে থাকলাম। এখনো জ্বর যায় নি। কবে যে জ্বর কমবে তা জানি না। শরীর তেমনি দুর্বল। ভেবেছিলাম মাঝখানে অন্তত কিছু লিখব। কিন্তু অসুখের প্রাবল্য এত বেশি যে কিছু লেখার ক্ষমতা ছিল না। টানা এক সপ্তাহ ধরে জ্বরের মধ্যে উত্তাপের সঙ্গে সহবাস করে এই দু দিন হলো একটু কম্পিউটার -এ এবসতে পারলাম। জানিনা কতক্ষণ তা পারব। আজ সকালেও রিপোর্ট এলো আমার প্লেটলেট আবার কমেছে। দেখি কতদিন বিশ্রাম নেওয়া যায়! শুনলাম জ্বর সেরে গেলেও তার পর আরো ৪-৫ দিন আমাকে বিশ্রাম নিতে হবে। ভারী বিপদ। 
এই দেখুন আর লিখতে পারছি না। কিছু অদ্ভুত স্বপ্ন লিখব ভাবলাম। ভালো লাগছে না একদম। সারা কলকাতা শহরটাই আসলে ভীষণ জ্বর গায়ে শুয়ে থাকে। মনটা অস্থির হয়ে আছে। দাঁত নখ বের করে সারা পৃথিবী তক্কে তক্কে রয়েছে। আমার বয়স হচ্ছে। কিছু কিছু জিনিস নিজে থেকেই আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে আসছে। কিছু স্বপ্ন নিজে থেকেই নিজেকে মুছে দিয়েছে। জানি আমার হয়ত আর কিছু পাওয়ার নেই, হারাবার নেই, এমনকি স্বপ্ন দেখার নেই। এ সত্যি এক অভিশপ্ত জীবনের কথা। আমার মনের মধ্যে বিদ্বেষ গুলো মাথা চারা দিচ্ছে। চেষ্টা করছি সেই বিদ্বেষ মূলক মন থেকে নিজেকে সরিয়ে আনার। কিন্তু পারছি কি? তাহলে আমার এত কষ্ট হচ্ছে কেন? বার বার কেন মনে হচ্ছে, আমার সব লেখালেখি আসলে সময়ের কাছে হারিয়েই যাবে। কেউ খুঁজে নিয়ে পড়বে না। আগামী যে সময় আসছে, তা মোটেও ভালো কোনো সময় নয়। বাংলা ভাষা থেকেই যারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা  পড়বে বাংলা কবিতা!!
সামাজিক ভাবে আমি যে ব্রাত্য, তার কারণ লুকিয়ে আছে আমারি মধ্যে। যা যা করলে মানুষের কাছে আমার গ্রহনযোগ্যতা বাড়ে, আমি সেই সব কিছুই করতে ভীষণ ব্যর্থ। 
গল্প কবিতা আর আমার লেখা উপন্যাস দুটো-ই থাক। কবিতা বেরোলেও হয়ত গল্প আর উপন্যাস কখনো আলোর মুখ দেখবে না। কী করেই বা দেখবে ... এই তো চারিদিকের গল্প উপন্যাসের  নমুনা। সিরিয়ালের চর্বিতচর্বন ন্যারেটিভ। 
দূর এত সমালোচনা করে কী বা লাভ! 
আমার তো আসলে জীবন থেকে কিছুই পাওয়ার কথা নেই। যা টুকু পাচ্ছি তা উপরি। কাজ করে যাওয়ার আছে। কিছু কথা বলে যাওয়ার আছে। তা সে যেমন ভাবেই হোক।
(ক্রমশ) 

Comments